শেকৃবিতে বাঙ্গি-তরমুজের ব্যাকটেরিয়া শনাক্তে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন

0
86

বাংলা খবর ডেস্ক: কৃষি প্রধান বাংলাদেশে অধিকাংশ ফসলই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। কৃষকরা লোকসান এড়াতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও কীটনাশক ব্যবহার করেন যা পরিবেশ ও মানুষ উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাঙ্গি ও তরমুজ অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময় ফসল।

তবে এ জাতীয় ফসল চাষাবাদ করে ভালো ফলন পাওয়ার ক্ষেত্রে ফল পচনকারী রোগ একটি বড়ো বাধা। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া ঘটিত ফল পচনকারী এ রোগটি ফসলের ফলন ও গুণগত মান কমিয়ে দেয় ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হয় কৃষকদের। ফল পচনকারী এ রোগের সহনশীল জাত বাছাইয়ের আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।

বাঙ্গি ও তরমুজের ব্যাকটেরিয়াজনিত পচনরোগ শনাক্ত এবং এ থেকে মুক্তি পেতে নিবিড় গবেষণা করেছেন তিনি। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘ইনহেরিটেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অব মলিকিউলার মারকারস লিঙ্কড টু ব্যাকটেরিয়াল ফ্রুট ব্লচ রেজিস্ট্যান্স ইন মেলন।’

সম্প্রতি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (শেকৃবিসাস) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে ড. মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এসিডোভোরাক্স সাট্রুলি (Acidovorax citrulli) ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে বাঙ্গির পচনরোগ হয়। আক্রান্ত ফসলের ক্ষতি থেকে আগাম রক্ষা পাওয়ার জন্য এই ব্যাকটেরিয়া শনাক্তকরণে তিন সেট মলিকিউলার মারকার ডেভেলপ করা হয়েছে।

তিনি জানান, এরই মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়ার দুটি স্ট্রেইনকে ক্লোনিং এবং সিকুয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ইউনিভার্সাল ডাটাবেস এনসিবিআই-এ সাবমিট করা হয়েছে। বাঙ্গির ৩৫টি এবং তরমুজের ৭৭টি ইনব্রিড লাইন/কালটিভারকে এই ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে ইনুকিউলেশন করা হয়েছে। এতে বাঙ্গির পচনরোগ সহনশীল ৬টি এবং তরমুজের ৪টি ইনব্রিড লাইন/কালটিভার শনাক্ত করা গেছে।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গির পচনরোগ প্রতিরোধে এক সেট মলিকিউলার মারকার ডেভেলপ করা হয়েছে। এটি দিয়ে আমরা চাষের আগেই বাঙ্গির পচনরোগ সহনশীল জাত বাছাই করতে পারব। ব্যাকটেরিয়া শনাক্তকরণের এই আধুনিক (পিসিআর) পদ্ধতিটি আমরাই প্রথম উদ্ভাবন করেছি। আধুনিক এই পদ্ধতি অবলম্বন করে সারাবছরই উন্নতমানের বাঙ্গি ও তরমুজ ফলানো সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফল দুটিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনস, মিনারেলস এবং স্বাস্থ্য সমৃদ্ধিকরণ এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা অপুষ্টি নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আশা করি, এই গবেষণাটি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কৃষিতে উন্নতির মাপকাঠি হিসেবে দেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।’

অপুষ্টিজনিত সমস্যা মোকাবিলায় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে সুষম খাদ্যের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ড. রফিকুল ইসলাম দক্ষিণ কোরিয়ার সুনচন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডির বিষয়বস্তু হিসেবে প্রায় তিন বছর এটি নিয়ে গবেষণা করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here