বাংলা খবর ডেস্ক:
রাজধানীর হাজারীবাগের বেরিবাঁধে রবিবার রাতে এমপি পুত্রের হাতে একজন নৌবাহিনী কর্মকর্তা সস্ত্রীক মারধরের শিকারের ঘটনায় হাজী সেলিমের ছেলে এরফান সেলিমকে র্যাব গ্রেফতার করেছে।
তবে এরফান সেলিমের আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, এরফান সেলিমকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
অপরদিকে, এমপি পুত্রের গাড়ি চালক মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।
ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল্লাহ হিল কাফী বলেন, গ্রেফতারকৃত মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ, রবিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির কলাবাগান ক্রসিংয়ে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়েছিল ‘সংসদ সদস্য’ স্টিকার লাগানো হাজী সেলিমের গাড়ি। এরপর নৌবাহিনীর ওই কর্মকর্তা মোটরসাইকেল থামান এবং নিজের পরিচয় দেন। এসময় হাজী সেলিমের গাড়ী থেকে দুই জন ব্যক্তি নেমে এসে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিমকে মারধর করে। একপর্যায়ে ওই কর্মকর্তা আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে লোকজন জমে গেলে সংসদ সদস্যের গাড়ি ফেলে মারধরকারীরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে গাড়ি ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
গাড়িচালক মিজানুর রহমানের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত:
ওদিকে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তার আগে সকালে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরফান সেলিম, তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ, এ বি সিদ্দিক দিপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
একই ঘটনায় র্যাব গ্রেপ্তার করেছে এমপি হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ এরফান সেলিমকে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ মোটরসাইকেলযোগে যাচ্ছিলেন। এ সময় এরফানের গাড়িটি তাকে ধাক্কা মারে। এরপর তিনি সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন।
তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলব’ বলে কিল-ঘুষি মারেন এবং আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ খান অভিযোগ করেছেন, ‘তারা আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায়। পরে আমার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডি থানার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
হাজি সেলিমের বাসায় অভিযান:
ওদিকে র্যাবের একটি ভ্রাম্যমান আদালত হাজি সেলিমের েবাসায় অবিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান ওয়াকি টকি, মদ, বিয়ার ও অস্র উদ্ধার করেছে। সোয়ারি ঘাট এলাকায় সাংসদ হাজী সেলিমের একটি বাড়ি আছে, সেটা ঘেরাও করে র্যাব সদস্যরা এ অভিযান চালাচ্ছে। ইরফান সেলিম নিজেও একজন জনপ্রতিনিধি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তিনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত ছিল।