রোজায় চাহিদা বাড়া খেজুরের রকম ফেরের অভাব নেই। কত নামের, কত স্বাদের খেজুর মেলে, সেটি নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। কিছু প্রজাতি আছে, যা সাধারণের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
এই যেমন ‘আম্বার খেজুর’। এক কেজি কেজি কিনতেই আপনাকে গুণতে হবে দুই হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা।
সোদি আরব থেকে আমদানি করা খেজুরটি অনেক বছর ধরেই পাওয়া যায় দেশের বাজারে।
বাজারে যেখানে ১৩০ টাকা কেজিতেও ফলটি পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে তিন, আড়াই, দুই বা দেড় হাজার টাকা কেজি খেজুরও মিলছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল প্রায় ১২-১৫ ধরনের খেজুর বিক্রি হচ্ছে। দামের দৌড়ে এগিয়ে যেসব খেজুর, তার মধ্যে একটি ‘আল-আনসার’ ব্রান্ডের ‘আম্বার খেজুর’। বিক্রেতারা জানান সৌদি আরবের মদিনা থেকে এসেছে এই ফলটি। আকারে বড় এই খেজুরের স্বাদও অসাধারণ।
একজন বিক্রেতা জানান, এবার প্রতি পাঁচ কেজির কার্টন তাদের কেনা পড়েছে এগারো হাজার টাকারও বেশি। সেদিক থেকে প্রতি কেজি কেনা পড়েছে দুই হাজার ৩০০ টাকা। আর বিক্রি করছেন দুই হাজার আটশ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।
বিক্রেতা মাসুদ রানা বলেন, ‘দামি জিনিস, কম চলে। চাহিদা কম। এক কার্টুন খেজুর বিক্রি করতে এক সপ্তাহও লাগে। কয়েক টাকা লাভ না করলে চলে না।’
‘তার উপর রোজা শেষের দিকেও যদি মাল বিক্রি না হয়, তাহলে তো লস। সব দিক তো হিসেব করতে হয়।’
খেজুরের মধ্যে চাহিদায় এগিয়ে ‘মরিয়ম খেজুর’। যা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি এক হাজার দুইশ থেকে এক হাজার তিনশ টাকায়।
এ ছাড়া চারশ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ‘গান্দিয়ালা খেজুর’। টোটারি এক হাজার টাকা, তিউনেশিয়া বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজি দরে।
মূলত বাংলাদেশের বাজারে খেজুর আমদানি করা হয় সৌদি আরব, দুবাই, তিউনেশিয়া, ইরাক, ইরান, পাকিস্তান ও ভারত থেকে। আমদানি করা হয় বলে বরাবরই খেজুরের দাম বেশি থাকে দেশীয় বাজারে।
টাউনহল বাজারের খেজুর বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, ‘সারা বছর আমদানি করলে দাম কম থাকে। বছরে মাল আসবে ২/৩ বার, দাম বাড়বেই। দাম বেশি থাকায় দামি খেজুরের কাস্টমার কম।’
যারা এসব দামি খেজুর কিনতে আসেন, তারা সামর্থবান সন্দেহ নেই। পকেট ভর্তি টাকা নিয়েই তারা বাজারে আসেন। দামের চেয়ে মানের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন তারা। তারপরও লাভের পরিমাণ কমালে আরও বেশি বিক্রি হতো-এমন কথাটি বললেন দুই জন।
মোহাম্মদপুর জাকির হোসেন রোডের বাসিন্দা তাওহিদ এলাহী বলেন, ‘দামি বলব না। আমি ভালো খেজুরটা পছন্দ করি। খেজুর যেহেতু দেশের বাইরে থেকে আসে, দাম একটু বেশি হওয়ারই কথা। তাই বলে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে চলে যাবে, এটা তো ঠিক না।’
আরেক ক্রেতা মিসেস রিয়াদ বলেন, ‘গত বছরের চাইতে দাম অনেক বেশি। কম হতে হবে তা বলছি না। তাই বলে এত বেশিও তো হতে পারে না। আমি তো প্রতি বছর নেই। আমার তো একটা ধারণা আছে।’
রমজানে প্রথম দিক বলে দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি। রোজার কয়েকদিন গেলে এই দাম কিছুটা হলেও কমবে বলে জানালেন বিক্রেতারা।
খোলা বাজারের আরো বিক্রি হচ্ছে মদিনা, নাগাল, কমলী, ফরিদা, বরই, খোরমা খেজুর। মিলছে ও কাঁচা খেজুরও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here